
ছেলেদের ফুটবলে সময়টা ভালো না গেলেও মেয়েদের ফুটবলে দাপট ধরে রেখেছে ব্রাজিল। ইকুয়েডরের রদ্রিগো পাজ এলগাদো স্টেডিয়ামে গতকাল (শনিবার) মধ্যরাতে ফাইনালের মহারণে নেমেছিল ব্রাজিল-কলম্বিয়া। নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ এবং অতিরিক্ত ৩০ মিনিট পর ৪-৪ সমতায় ছিল লড়াই। নারী কোপা আমেরিকার রুদ্ধশ্বাস এই ফাইনালের ফল নির্ধারণ হয়েছে টাইব্রেকারে। যেখানে কলম্বিয়াকে হারিয়ে নবমবারের মতো কোপার শিরোপা জিতল ব্রাজিলের মেয়েরা। এরই সঙ্গে ছেলেদের পর এবার মেয়েদের এই মহাদেশীয় মঞ্চেও স্বপ্নভঙ্গ হলো কলম্বিয়ার।
ম্যাচের পরতে পরতে ছিল রোমাঞ্চ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে প্রতিবারই লিড নিয়েছে কলম্বিয়া। এরপর পাল্টা লড়াইয়ে ম্যাচে ফেরে সেলেসাওরা। অতিরিক্ত সময়ের খেলায় ব্রাজিল এগিয়ে গেলেও ছাড় দেয়নি কলম্বিয়ান মেয়েরা। ৪-৪ সমতার পর টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে রেকর্ড সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়নদের জয় নিশ্চিত হয়েছে।
এর আগে ৮ গোলের ম্যাচটিতে ব্রাজিলের পক্ষে কিংবদন্তি মার্তা ভিয়েরা জোড়া এবং অ্যাঞ্জেলিনা, আমান্দা একটি করে গোল করেন। বিপরীতে কলম্বিয়ার পক্ষে একবার করে স্কোরশিটে নাম তোলেন লিন্ডা কাইসেদো, মাইরা রামিরেজ ও লেইসি সান্তোস। তাদের আরেকটি গোল আসে ব্রাজিলের টার্সিয়ানের আত্মঘাতী অবদানে। ম্যাচজুড়ে বল দখল ও শটে অবশ্য আধিপত্য ছিল সেলেসাও মেয়েদের। ৬০ বলের পজিশন ছাড়াও ২১ শটের মধ্যে ৯টি লক্ষ্যে রাখে। বিপরীতে কলম্বিয়ার ১৪ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে।
নারী ফুটবলে ছয়বারের বর্ষসেরা খেলোয়াড় মার্তা অবশ্য এই ম্যাচেও বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। ৮২ মিনিটে মাঠে নেমেই ইনজুরি সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে গোল করেন তিনি। ১০৫ মিনিটে মার্তার দ্বিতীয় গোলই মূলত ব্রাজিলকে ফাইনালে প্রথমবার লিড পাইয়ে দেয়। যদিও ১০ মিনিট পর সেই গোল শোধ করে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যায় কলম্বিয়া। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৩৯ বছর বয়সী অন্যতম বিশ্বসেরা তারকারই জয় হয়েছে। অথচ প্যারিস অলিম্পিকের পরই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন মার্তা, কোচ আর্থুর ইলিয়াস ও ব্রাজিলের প্রয়োজনে খেলছেন এখনও।
কোপার ফাইনালে ব্রাজিলের জয়ের অন্যতম নায়ক গোলরক্ষক লোরেনা দ্য সিলভা। পেনাল্টি শ্যুটআউটে তিনি দুটি গোল বাঁচিয়েছেন। যা টানা পঞ্চমবার কোপার ফাইনালে জয় নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলের। একইসঙ্গে তারা কলম্বিয়াকে ৫ ফাইনালের ৪টিতেই তিক্ত হারের স্বাদ দিয়েছে। এর আগে ছেলেদের ২০২৪ কোপা আমেরিকার ফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল কলম্বিয়া।
এর আগে নয় আসরের আটটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে দক্ষিণ আমেরিকান নারী ফুটবলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছিল ব্রাজিল। দশম আসরে তারা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। যদিও সেলেসাও দল ও কিংবদিন্ত মার্তার বিশ্বসেরা হওয়ার আক্ষেপ এখনও ঘুচেনি। বিশ্বকাপে তাদের সেরা অর্জন ২০০৭ আসরে রানার্সআপ। এর বাইরে তিনবার ব্রাজিলিয়ান মেয়েরা অলিম্পিক ফাইনাল থেকে রৌপ্য (রানার্সআপ) নিয়ে ফিরেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১০:৪৩ ৫ বার পঠিত