
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সাগর ও মহাসাগর রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও বহুমুখী সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ (এসডিজি) অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণের একমাত্র উপায়। বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের বাংলাদেশে টেকসই সীফুড প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা আজ ঢাকায় তার বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে জাপানের টোকিওতে সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন ভবনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘Ocean Decade Fifth Foundations Dialogue – High-Level Roundtable with Ambassadors, Experts and Practitioners’ শীর্ষক সভার ‘Driving Ocean Leadership and Innovation: Advancing Governance, Blue Economy and Marine Science to Achieve 30×30’শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে প্লাস্টিক দূষণে নবম অবস্থানে রয়েছে, যার বড় অংশই আসে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় চলমান বৈশ্বিক চুক্তিতে ভৌগোলিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ বিধান থাকা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প বাংলাদেশের উপকূলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে হংকং কনভেনশনকে তিনি ‘অপর্যাপ্ত’ বলে অভিহিত করেন। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে বলে উপদেষ্টা সতর্ক করেন। বিশ্বের ৫২টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র একই ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বৈশ্বিক সংহতি এখন সময়ের দাবি।
বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অর্থনীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ‘Assessment of Coastal and Marine Biodiversity Resources and Ecosystem’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মাধ্যমে জাতীয় ডাটাবেজ, সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ প্রটোকল তৈরি হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও এর প্রভাব বিষয়ে গবেষণাও সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ড. আতসুশি সুনামি, জাপানে নরওয়ে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিন ইগ্লুম, ইউনেস্কো-আইওসির চেয়ার অধ্যাপক ইউতাকা মিচিদা, আইওসি-আইএনডিও সাব-কমিশনের চেয়ার ড. সাইফ আলগাইস এবং ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র জোট (এওএসআইএস) এর চেয়ার ও পালাউ-এর জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ইলানা ভি. সাইদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৩:০৫ ৪ বার পঠিত