শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫

কিউবার পর জাতীয় দলেও খেলোয়াড় ছাড়ছে না কিংস

প্রথম পাতা » খেলা » কিউবার পর জাতীয় দলেও খেলোয়াড় ছাড়ছে না কিংস
শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫



কিউবার পর জাতীয় দলেও খেলোয়াড় ছাড়ছে না কিংস

বাহরাইনে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্যাম্পে ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার কিউবা মিচেলকে ছাড়েনি বসুন্ধরা কিংস। কিউবার মতো এবার সিনিয়র জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ১০ ফুটবলারকেও ছাড়ছে না তার। আজ (শুক্রবার) কিংসের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বাফুফের সাধারণ সম্পাদককে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন।

খেলোয়াড় না ছাড়ার পেছনে বসুন্ধরা কিংস উল্লেখ করেছে, ‘দীর্ঘদিন খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের বাইরে থাকা, খেলোয়াড়দের ভবিষ্যত বিবেচনা ও ইনজুরি প্রবণতা কমানোর জন্য বাফুফের ২০২৫-২৬ ফুটবল মৌসুম সামনে রেখে আমাদের প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিধায় আমাদের খেলোয়াড়দের ছাড়করণ সম্ভব হচ্ছে না বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’ চিঠিতে তারা ইনজুরি সংক্রান্ত রেফারেন্স হিসেবে গত বছর বিশ্বনাথ ঘোষের ঘটনা উল্লেখ করেছে। খেলোয়াড় ইনজুরি প্রবণতা কমিয়ে আনতে তারা খেলোয়াড় ছাড়ছে না এমনটাই চিঠিতে জানিয়েছে।

বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলারদের আজ জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এদিনই তারা বাফুফেকে চিঠি দিয়ে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি আবার জাতীয় দল কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যানও। জাতীয় দলের ক্যাম্প ১৩ আগস্ট শুরু, এই সংক্রান্ত একটি চিঠিতে তারও স্বাক্ষর রয়েছে। এরপরও তার ক্লাব খেলোয়াড় না ছেড়ে ফেডারেশনকে সংকটে ফেলেছে।

জাতীয় দল কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে ইমরুল হাসান ১৩ আগস্ট জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু নিয়ে এক চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ৩০ জুলাই। অথচ দুই সপ্তাহ পর তার ক্লাবের খেলোয়াড়ই জাতীয় দলে ক্যাম্পে আসার অনুমতি পাচ্ছে না

১২ সেপ্টেম্বর থেকে ঘরোয়া ফুটবলের মৌসুম শুরু হবে। সেই মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নিতেই কিংস আপাতত খেলোয়াড় ছাড়তে চাইছে না। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী ফিফা উইন্ডোর ৭২ ঘণ্টা আগেই ক্লাব শুধু খেলোয়াড় ছাড়তে বাধ্য, এর আগে নয়। আইনত বসুন্ধরা কিংসের অবস্থান ভুল নয়, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এবং কিংসের সভাপতি সবকিছু অবহিত হওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে খেলোয়াড় না ছাড়ার এমন আচরণের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। খেলোয়াড় ছাড়ার বিষয়ে কিংসের দ্বিচারী আচরণও স্পষ্ট। ইনজুরি এড়ানো ও প্রাক মৌসুম প্রস্তুতিতে জাতীয় দলে কোনো খেলোয়াড় ছাড়ছে না, অথচ বাহরাইনে আবার অ-২৩ দলে জনি, রিমন ও শ্রাবণকে ছেড়েছে। শ্রাবণ এখন কিংসের মূল গোলরক্ষক।

নেপালে দু’টি প্রীতি ম্যাচের জন্য কিংসের তপু বর্মণ, সাদ উদ্দিন, তারিক কাজী, হৃদয়, সোহেল রানা, মো. সোহেল রানা, শাহরিয়ার ইমন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও রাকিব হোসেন ডাক পেয়েছিলেন। কিংস ছাড়াও ঢাকা আবাহনী ও অন্য ক্লাবের ফুটবলারও রয়েছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। কিংসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ জন ঢাকা আবাহনীর ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন। ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন আবাহনীর মিতুল মারমা, কাজেম, শাকিল, ইব্রাহিম ও পাপন। আবাহনী ও অন্য ক্লাবগুলো খেলোয়াড় ছাড়তে পারলে কিংস কেন পারছে না এখানেই প্রশ্ন আসছে। বসুন্ধরা কিংসের ম্যানেজার ওয়াসিমুজ্জামান, ক্লাবের সভাপতি ইমরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কারও কাছেই যোগাযোগ করে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান হয়েও ক্লাবের স্বার্থ অগ্রাধিকার দিয়েছেন এটা স্পষ্ট–ই। সেই ইমরুল হাসানই আবার বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। আজকের ঘটনার পর লিগের ফিকশ্চার ও নানা বিষয়ে ইমরুল হাসানের ওপর আস্থার সংকট ফুটবলাঙ্গনে আরও বহুগুণে বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৭:৪৫   ৫ বার পঠিত