
অন্তবর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, কোটা আন্দোলনে ছাত্ররা নেতৃত্বে থাকলেও আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে প্রায় ৭৫% হতদরিদ্র মানুষ এই আন্দোলনে মিশে আত্মত্যাগ করেছে।
তিনি বলেন, হতদরিদ্র মানুষের তো কোন দায় ছিল না এই আন্দোলনে তারপরও তারা কেনো যুক্ত হলো এটা আমাদের ভাবনার ব্যাপার৷ অধিকারহারা জনগণ কতটা বিক্ষুব্ধ হলে বুলেটের সামনে দাঁড়াতে পারে সেটার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তারা।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পেনিনসুলা ডেভেলপমেন্ট’র উদ্যোগে ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘মুগ্ধ জুলাই’ এর বিশেষ সংখ্যার প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন সম্পৃক্ত না হয়েও জুলাই শহীদ হিসাবে যারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন আমরা তা গেজেট থেকে বাতিল করবো। এইভাবে আহতের সঠিক তালিকাও গেজেট আকারে প্রকাশ করবো। জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ এবং আহতরা আমাদের চেতনা প্রতীক। এই চেতনাই আমাদের অনেক দূর নিয়ে যাবে। আমরা তিনটি রক্তক্ষয়ী অধ্যায় পেরিয়ে এসেছি, সর্বশেষ আমরা নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেরা লড়লাম। আমাদের বৈষম্য, অবিচার, অন্যায় এর বিরুদ্ধে সমগ্র জাতি যুদ্ধে নেমেছিল।
তিনি আরো বলেন, শুধু ছাত্র নয় সমাজের সর্ব শ্রেণীর মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে। গৃহবধূরা শরবত নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। খিচুড়ি, পানি গিয়েও মানুষ আন্দোলনকারীর পাশে ছিল। এটা শুধু ছাত্রদের সংগ্রাম নয় সমগ্র জাতির সংগ্রাম এটা। আগে কখনো এমন হয়নি যে, একটা জাতির ভবিষ্যৎ নির্ণয়ের জন্য সবাই একত্রিত হয়ে আমরা আলোচনা টেবিলে বসে বসে আলোচনা করছি। এখানে ঐক্য হচ্ছে, বিভিন্ন মত হচ্ছে এগুলো আমাদের আশাবাদী করছে। কারণ এ-ই সব কিছু হচ্ছে আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ণয়ের জন্য। আমাদের সরকার তাদের জন্য নানা কিছু করেছে আমরা তা প্রতিনিয়ত তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। এককালীন অনুদান আছে, মাসিক ভাতার ব্যাপারটাও আছে, একইসাথে আমরা পুনর্বাসন ব্যবস্থা করছি।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, আমাদের প্রশাসনিক কাঠামো, বিচার ও শিক্ষা ব্যবস্থায় জরুরি সংস্কার দরকার। এখানে শাসনের মনোভাব বিদ্যমান, সেবার নয়—এই মানসিকতা বদলাতে হবে। এটা করতে পারলেই বাংলাদেশ তার সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই শহীদদের আত্মত্যাগ একদিন জাতিকে সঠিক পথে এগিয়ে নেবে। অতীত যেন ভবিষ্যতের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। আমাদের অগ্রযাত্রা হোক আলোর দিকে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:১১:৫৯ ৬ বার পঠিত