ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে : মির্জা ফখরুল

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে : মির্জা ফখরুল
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫



ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হওয়াটা ‘ইতিবাচক’। তিনি বলেন, মৌলিক বিষয়গুলোর সমাধান করে দ্রুত নির্বাচনের একটা মোটামুটি ধারণা পাওয়া গেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হলে আমাদের মধ্যেকার দ্বিধা কাটিয়ে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারব।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক একটা বোঝাপড়া না থাকলে তিক্ততা সৃষ্টি হবে। সেজন্য দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক একটা বোঝাপড়া থাকতে হবে। এই বোঝাপড়া না থাকলে রাজনীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি বাড়বে। গণতন্ত্রের কাদা ছোড়াছুড়ি হবে। অনেক অনেক কথা আসবে; কিন্তু এটার একটা সীমা থাকা দরকার। তা না হলে একটা তিক্ততা সৃষ্টি হয়। যে তিক্ততা ভবিষ্যতে গিয়ে রাজনীতিকে আরও কলুষিত করে। আমি আশা করব, আমরা আগামী দিনে একটা সুন্দর বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার একটা নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমি মনেপ্রাণে গণতন্ত্র বিশ্বাস করি। বিপ্লব যারা করবেন তারা বিপ্লবী দল করবেন, বিপ্লবী সংগঠন করবেন এবং বিপ্লব করে বিপ্লবী সরকার গঠন করে তারা দেশে বিপ্লবকে সফল করবেন বলেও মনে করি।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে যাব। জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ কাজগুলো করার চেষ্টা করব। তারপর আবার জনগণের কাছে ফিরে যাব, যদি তারা আমাকে গ্রহণ করেন আমি আসব, না হলে আসব না। সবাইকে মতামত প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হবে, সবাইকেই তার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, একজন সাধারণ মানুষের যেমন ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে, সমাজে তার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সুযোগও রয়েছে। কিন্তু আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই লিবারেল ডেমোক্রেসি একটু একটু করে এখন নিচে নেমে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনমানসিকতা সবকিছু আস্তে আস্তে বদলায়। সে বদলানোর ফলে দেখা যায় যে, চলমান রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন ছাড়া রাজনীতিকে ধরে রাখা কঠিন। সম্প্রতি আমি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে চীনে গিয়েছিলাম। যতবার চীনে যাই দেখি চীনের ভিন্ন চেহারা। চীন প্রতিদিন বদলাচ্ছে। আর তাদের সিস্টেম তো ভিন্ন। আমাদের সিস্টেম ভিন্ন। আবার দেখুন, আমেরিকার রাজনৈতিক কাঠামো আর আমাদের কাঠামো কিন্তু এক নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে গোলামি থেকে মুক্তি পেয়েছি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ গোলামি থেকে। তারপরে পাকিস্তানি গোলামি শুরু হয়েছে। তারপর আবার আপনার বাংলাদেশে প্রভুদের গোলামি শুরু হয়েছে। এই গোলামিতেই আছি আমরা। গোলামদের কিন্তু একটা সংকীর্ণ মন তৈরি হয়। কিছুতেই খুব বেশি বড় করে দেখার সুযোগ হয় না। আমি মনে করি, আমাদের বড় করে দেখার চেষ্টা করা উচিত। আমরা একটা মুক্ত সমাজ চাই। আমরা একটা মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই।

অন্তর্বর্তী সরকার গত এক বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও তালিকা তৈরি করতে না পারার সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তারা এক বছরেও কি এদের খুঁজে পেলেন না? যারা এই দেশকে পরিবর্তনের জন্য প্রাণ দিল রক্ত দিল তাদের জন্য একটা তালিকা তৈরি করে সঠিকভাবে তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারলেন না! দ্রুত একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচিত সরকারের কাছে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।

গণঅভ্যুত্থানে আহত সাভারের একটি শিশুর কৃত্রিম মাথা লাগানোর বিষয়টি উল্লেখ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মির্জা ফখরুল বলেন, কাল সাত বছরে একটি শিশু এসে হঠাৎ করে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। শিশুটি বলেছে, আমার মাথায় খুলিটা নেই, খুলিটা প্লাস্টিকের। প্লাস্টিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল খুলি তৈরি করে লাগিয়ে দিয়েছে—এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কী হতে পারে? আমরা যদি সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারি তাহলে ওই শিশুদের সামনে, আমাদের বোন-মায়ের সামনে সঙ্গে নিঃসন্দেহে একটা বড় প্রতারণা করব।

বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হওয়ায় মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে মতিউর রহমান ও মাহমুদুর রহমানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়াসহ কমিটির সদস্যরা। বাকিরা বিদেশে ও অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ। অনুষ্ঠানের আগে প্রেস ক্লাব চত্বরে নিমগাছের চারা রোপণ করেন বিএনপি মহাসচিব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫০:৪০   ৫ বার পঠিত  




ছবি গ্যালারি’র আরও খবর


দক্ষিণপন্থা জুজুর ভয় দেখিয়ে জনগণকে বোকা বানানো যাবে না: নাসীরুদ্দীন
সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর পরিদর্শনে নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ইসরাইলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিলো স্লোভেনিয়া
রাত পেরিয়ে সকালেও শাহবাগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ অবস্থান
ইতিহাসের এই দিনে



আর্কাইভ