
টিসিবির ভুয়া কার্ড বাতিল করে ভোক্তাদের নতুন করে স্মার্ট কার্ড দেয়ার কথা জানালেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
শনিবার (৩ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সিএসডি এলাকায় সাইলো’র নির্মাণাধীন খাদ্য গুদাম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা জানান।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষকরা যাতে তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পান সে ব্যাপারে খুবই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে এলেও কৃষকদেরও ন্যায্য দাম পেতে হবে। কারণ, কৃষকরা ন্যায্য দাম পেলে তারা শস্য উৎপাদনে আরও উৎসাহী হবেন। তাই সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।’
এ বছর বোরোর আশানুরূপ ফলনের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বোরোর ফসল উৎপাদন বেড়েছে। এতে করে আমরা একটি ভালো মজুদ গড়ে তুলতে পারবো। বোরোর পাশাপাশি অন্য ফসলের উৎপাদনও যদি ভালো হয় তাহলে টিসিবি এবং ওএমএসসহ সরকারের খাদ্য বিষয়ক কর্মসূচিগুলো আমরা আরও ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারবো। চালের দাম ক্রমান্বয়ে আরেকটু কমে আসলে আটার দামও কমে যাবে।’
মিলগুলোতে মোটা চাল কেটে চিকন করার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘এটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তারা অস্বীকার করলেও বড় যে চাল মিলগুলো রয়েছে, সেগুলোতে আমরা তদন্ত করছি। যদি চাল কেটে চিকন করা হয়, এটা যাতে না করা হয়- এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
গম ও আটার দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম বলেন, ‘আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজে সবাই আমরা এক বেলা রুটি খাই। আগে মানুষ তিনবেলা ভাত খেয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশে গমের চাহিদা রয়েছে বছরে কমপক্ষে ৭০ লাখ টন। আমাদের দেশে গমের আভ্যন্তরীণ উৎপাদন ১০ লাখ টন। বাকি ৬০ লাখ টন গম বেসরকারিভাবে আমদানি করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে আমরা যেটা আমদানি করি সেটার কিছু পরিমাণ ওএমএসে দেই। বাকিটা আমাদের রেশনিংয়ে পুলিশ-মিলিটারি-আনসার ও জেলখানাসহ অন্যান্য সংস্থায় দেয়া হয়।’
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্মাণাধীন সাইলো গুদাম পরিদর্শন, কাজের অগ্রগতি যাতে তরান্বিত যাতে করা যায় সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের পরামর্শ ও উপদেশ দেয়া হয়েছে। মোটামুটিভাবে আমাদের সাইলো গুদামের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। আমরা সহসাই এটার মধ্যে মালামাল রাখতে পারবো। সারা দেশে এবার আশাতীত বোরো ফসল উৎপাদন হয়েছে। সুতরা আমরা বিভিন্ন জায়গায় যাতে মালামাল রাখতে পারি সেজন্য সাইলোগুলো পরিদর্শন করছি।’
নারায়ণগঞ্জের খাদ্য গুদামগুলোর বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে মজুদ করার মতো ভালো জায়গা রয়েছে। সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগে নদীপথে ও সড়ক পথে চলাচল করা যায়, একটু চেষ্টা করলে রেলপথেও যোগাযোগ করা যাবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন: নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হোসেন, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলামসহ খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিভাগের কর্মকর্তারা।
খাদ্য গুদাম পরিদর্শন শেষে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার নারায়ণগঞ্জের সার্কিট হাউজে গিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার সঙ্গে জেলার খাদ্য মজুদ এবং ওএমএসসহ বিতরণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৬:০৬ ৯ বার পঠিত