ভারতে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে কারাভোগ শেষে ১১ জন বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ দেশে ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
জানা গেছে, ভিন্ন সময়ে দালালের প্রলোভনে পড়ে এসব বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। পরে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন। কারা মেয়াদ শেষে আদালতের নির্দেশে পশ্চিম ত্রিপুরার নরসিংগর ক্ষণস্থায়ী আটক কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়। পরে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তারা দেশে ফেরেন।
আখাউড়া স্থলবন্দরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদের গ্রহণ করেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব আলমাস হোসেন, কনসুলার এসিস্ট্যান্ট ওমর শরীফ, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জি এম রাশেদুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন ওসি আব্দুস সাত্তার, আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন, আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মো. মুখলেছুর রহমান এবং ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সিনিয়র কর্মকর্তা মো. শিহাবুল হোসেন।
ফিরে আসা ব্যক্তিরা জানান, কেউ কাজের খোঁজে, কেউ আত্মীয়ের টানে বা কেউ না বুঝেই দালালের ফাঁদে পড়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। কেউ কেউ বলেন, ভারতে প্রবেশের পরপরই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের নির্দেশে জেল ও হোমে আটক রাখা হয়।
ভারত ফেরত মো. হেলাল জমাদ্দারের ভাই মো. বেলাল জমাদ্দার বলেন, আমার ভাই ৮ মাস আগে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে জানতে পারি সে ভারতে আটক হয়েছে। সরকারি প্রক্রিয়া শেষে আজ ভাইকে ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
ঢাকার নাঈম আলী বলেন, আমার ভাই ৮-৯ মাস আগে দালালের খপ্পরে পড়ে ভারতে গিয়ে আটকা পড়ে। সাজার মেয়াদ শেষে আজ দেশে ফিরেছে।
ফারজানা আক্তারের মা রাবেয়া আক্তার বলেন, “আমার মেয়ে বান্ধবীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। আজ তাকে ফিরে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৪ মাস আগে এক ঠিকাদার কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ভারতে নিয়ে যায়। ছয় মাস কাজ করার পর পুলিশ ধরে ফেলে। এরপর ৬ মাস জেল ও আড়াই মাস হোমে ছিলাম। এখন দেশে ফিরে খুব ভালো লাগছে।
ফিরে আসা বাংলাদেশিরা হলেন কুমিল্লার ফারজানা আহমেদ নিপা, ফেনীর মো. ইব্রাহিম, বাগেরহাটের হেলাল জমাদ্দার, রাজশাহীর মো. আকরামুল ইসলাম,
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কবীর শেখ, রাহুল শেখ, মো. আশরাফুল হক, সুমন রানা, বদরুল ইসলাম, মো. আব্দুল মান্নান এবং মো. রুহুল আমিন।
দীর্ঘদিন পর স্বজনদের ফিরে পেয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্য রেখায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কাঁদেন অনেকে। পরে ভুক্তভোগীরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪০:৩৪ ৩ বার পঠিত