চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ মাসে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ৯ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি অর্জন ১০.২২ শতাংশ

প্রথম পাতা » অর্থনীতি » চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ মাসে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ৯ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি অর্জন ১০.২২ শতাংশ
মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪



চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ মাসে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ৯ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি অর্জন ১০.২২ শতাংশ

চট্টগ্রাম বন্দরে গত তিন মাসে (আগস্ট থেকে অক্টোবর) কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে আট লাখ ৩০ হাজার ৫৮২টি। গত বছর একই সময়ের চেয়ে ৭৬ হাজার ৯৮৬টি টিইইউএস বা ৯.০১৬ শতাংশ বেশি। আগের বছরের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ১০.২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে শহীদ মোহাম্মদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

জাহাজের এভারেজ ওয়েটিং টাইম কমিয়ে আনা প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৫.৫ হাজার কন্টেইনারের স্থিতি ছিল। অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮৫ শতাংশ অকুপাইড ছিল। বিগত তিন মাসে পদ্ধতিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে তা ৩৪ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে জাহাজের এভারেজ ওয়েটিং টাইম ৬ থেকে ৮ দিন হতে একদিনে নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আগমনের পর জাহাজসমূহ অন এরাইভাল বার্থিং পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। এই প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থ বছরের গত ৪ মাসে ১ হাজার ৬৪৩.৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আয়ের তুলনায় ২১.৮৫ শতাংশ বেশি এবং একই সাথে রাজস্ব উদ্ধৃত ২৮.০১ শতাংশ বেশি।’

আমদানি পণ্যের কনটেইনার পর্যাপ্ত হলে করাচি-চট্টগ্রাম রুটে ভবিষ্যতে নিয়মিত জাহাজ পরিচালনা করতে মালিকরা আগ্রহী জানিয়ে রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ইতিপূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানি হতো। নতুন রুট চালু হওয়ায় বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এতে সাশ্রয়ী ব্যয় ও সময়ে উভয় দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে নতুনভাবে গতিশীলতা সৃষ্টি হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, করাচি বন্দর থেকে লাইনার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রথমবার গত ১১ নভেম্বর এইচআর শিপিং লাইনের অধীনে একটি জাহাজে ৩২৮ কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম আসে। ১২ নভেম্বর কনটেইনার খালাস করে চট্টগ্রাম ত্যাগ করে। জাহাজটি মূলত দুবাইয়ের জেবল আলী বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে করাচি বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম আসে। জাহাজটির সাধারণ রাউন্টিং হচ্ছে দুবাই জেবল আলী-করাচি-চট্টগ্রাম-ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়া-মুন্দা (ভারত)-দুবাই।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে আধুনিক পোর্ট ইকোসিস্টেমে পোর্ট কমিউনিটি সিস্টেম প্রবর্তন, ডিজিটালাইজেশন এবং আধুনিকীকরণের মাধ্যমে একটি বিশ্বমানের বন্দরে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি পত্র ও নথি আদান-প্রদান সহজে ও দ্রুত সম্পাদনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের শতকরা ৮০ ভাগ কাজ ডি-নথি পদ্ধতিতে সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণ এবং এর মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি প্রকল্পে গত তিন মাসে ১.৩৭ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি আগামী ২০২৫ সালের জুন এ সমাপ্ত হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের সিন্ডিকেট, মনোপলি ভেঙে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ইতিপূর্বে ২৩টি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে যার সুফল ইতিমধ্যে বন্দর ব্যবহারকারীগণ পেতে শুরু করেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে চবকের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম ফজলার রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:২০:১০   ৬৪ বার পঠিত  




অর্থনীতি’র আরও খবর


জুলাইয়ে রেমিট্যান্সে শীর্ষে ঢাকা বিভাগ, তলানিতে রংপুর
মার্কিন শুল্ক: চুক্তির আগে আরও দর কষাকষির সুযোগ রয়েছে
ডিজিটাল অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখায় ১৭ কোম্পানিকে সম্মাননা জানিয়েছে ভিসা
সরকারের অগ্রগতি অন্তর্দৃষ্টিতে দেখার পরামর্শ অর্থ উপদেষ্টার
অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ফেরেনি: টিআইবি



আর্কাইভ