তৈরি পোশাক রফতানির আড়ালে ৪শ কোটি টাকা বিদেশে পাচার!

প্রথম পাতা » অর্থনীতি » তৈরি পোশাক রফতানির আড়ালে ৪শ কোটি টাকা বিদেশে পাচার!
সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩



তৈরি পোশাক রফতানির আড়ালে ৪শ কোটি টাকা বিদেশে পাচার!

তৈরি পোশাক রফতানির আড়ালে ১০টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ মার্কিন ডলার বিদেশে পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় চারশ কোটি টাকারও বেশি।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের যুগ্ম পরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খানের স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, অভিনব কায়দায় রফতানি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্যের চালান বিদেশে রফতানি হচ্ছে; কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসিত হচ্ছে না - এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্ট জালিয়াতি করে অন্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রফতানি করেছে এবং বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নং কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করেছে।

এক্ষেত্রে কোনো অর্থ দেশে প্রত্যাবাসিত না হয়ে সেই রফতানি মূল্য বাবদ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে চলমান অনিয়মের তদন্তকালে ১০টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে এক হাজার ২৩৪টি পণ্যচালানে এমন জালিয়াতি করেছে বলে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। রফতানিসম্পন্ন এসব চালানের বিপরীতে পণ্যের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ১২১ মেট্রিক টন। যার প্রত্যাবাসনযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ তিন কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ মার্কিন ডলার (চারশ কোটি টাকারও বেশি)।

এ ১০টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে: সাভারের আশুলিয়ার প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড, ঢাকার গুলশানের ফ্যাশন ট্রেড, ঢাকার উত্তরার এম. ডি. এস ফ্যাশন, গাজীপুরের টঙ্গীর হংকং ফ্যাশন লিমিটেড, ঢাকার বনানীর থ্রি-স্টার ট্রেডিং, ঢাকার মিরপুরের ফরচুন ফ্যাশন, ঢাকার কচুক্ষেতের অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড, গাজীপুরের টঙ্গীর পিক্সি নিট ওয়্যার্ড লিমিটেড, ঢাকা শাহবাগের স্টারলাইজ বিডি লিমিটেড এবং ঢাকার খিলক্ষেতের ইডেন স্টাইল টেক্স।

বিভিন্ন দলিল পর্যালোচনা করে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর জানতে পেরেছে, এ প্রতিষ্ঠানগুলো টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট ও পোলো শার্ট ইত্যাদি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরবও নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রফতানি দেখিয়ে অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।

এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্টে নেচার অব ট্র্যানজেকশনে কোড ২০ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বলে জানানো হয়েছে।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর জানিয়েছে, এ ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিল অব এক্সপোর্টগুলো পর্যালোচনায় বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে উল্লেখ করা তথ্যের মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। বিল অব এক্সপোর্টে উল্লেখ করা সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই ওই ব্যাংকে লিয়েনকৃত নয়।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে ওই ব্যাংক সম্পর্কিতও নয়। ফলে ব্যাংকটির মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লেখ করা সেলস কন্ট্রাক্ট বা ইএক্সপির রফতানিগুলো প্রত্যাবাসিত হয়নি বা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বিল অব এক্সপোর্টে অন্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করেছে। এ কথা উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো নেচার অব ট্র্যানজেকশনে বিশেষ রফতানির জন্য প্রযোজ্য কোড ২০ ব্যবহার করেছে। অথচ তাদের কারো ক্ষেত্রেই এ সিপিসি কোড প্রযোজ্য নয়। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বমোট ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ মার্কিন ডলার পাচার করেছে।

ইএক্সপির কার্যকারিতা না থাকায় বৈধ পন্থায় বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদফতর জানিয়েছে, এক্ষেত্রে অর্থপাচার হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ ১০ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ কার্যক্রম নেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩২:৪৩   ৭৪ বার পঠিত  




অর্থনীতি’র আরও খবর


বাস্তবসম্মত ও ব্যবসাবান্ধব বাজেটের আশ্বাস দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
চলতি অর্থবছরে ৩.৯ শতাংশ হবে প্রবৃদ্ধি, বাড়বে মূল্যস্ফীতি : এডিবি
বিমসটেক মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গঠনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন চায় বাংলাদেশ
বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে গেল আরো ১০৫ মেট্রিক টন আলু
পাচার হওয়া কয়েকশ কোটি ডলার এ বছরই ফিরিয়ে আনা সম্ভব : অর্থ উপদেষ্টা



আর্কাইভ