গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিএনপিকে বারবার ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও প্রতিবারই শক্তিশালীভাবে ফিরে এসেছে—ফিনিক্স পাখির মতো। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নিয়োজিত। আমাদের ধ্বংস করার চেষ্টা বারবার হয়েছে। তবুও বিএনপি প্রতিবারই ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে এসেছে—বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শ, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন এবং খালেদা জিয়ার আদর্শকে সামনে রেখে।’

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের নেতারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নীরব, মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিশেষ মোনাজাতে অংশ নিয়ে তারা শহীদ রাষ্ট্রপতির আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বিএনপিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে আমাদের প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষকে মামলার মুখোমুখি করা হয়েছে, প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে।’

তিনি জানান, বিএনপি গত ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাসিত অবস্থান থেকে দীর্ঘ সময় এই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

ফখরুল বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে জনগণের আন্দোলন ও ছাত্র-যুবকদের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সেই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। এখন আমাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ হলো আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করা।’

বিএনপির পক্ষ থেকে সংস্কার কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনে বিএনপি যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিল, তা সমাধানে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি।’

ক্ষমতায় এলে দেশের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তনের সংকেত দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচি প্রবর্তনের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি নিয়েছে। জনগণের সমর্থন পেলে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে নৈতিক পরিবর্তনও ঘটবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান বিশাল। জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করেছিলেন এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অর্থনীতিতে মুক্তবাজার অর্থনীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো বদলে গিয়েছিল। তিনি দেশকে পোশাক শিল্পে স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেন এবং বিদেশে পোশাক রপ্তানি শুরু করেন। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরায় চালু করেছিলেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছিলেন।’

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:০৬   ৬ বার পঠিত