জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিক্স মানেই বিচার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন। আজ ১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সের সংবাদ সম্মেলনের বড় অংশ জুড়েই ছিল জাজ বিষয়ে। ফেডারেশন অবশ্য বিগত ভুল-ত্রুটি শুধরে এবার সম্পূর্ণ নির্ভুল ফলাফল প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে অনেক সময় পরিষ্কার ব্যবধানে একজন প্রথম হলেও আরেকজনকে প্রথম করার ঘটনাও ঘটেছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ বিকেলেই জাজদের রিফ্রেশার্স কোর্স রয়েছে। জাজদের সঙ্গে আমরাও বৈঠক করব। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে ফলাফল প্রদান করা হবে। এখন ফটোমেশিনও রয়েছে ফলে পক্ষপাত করার সুযোগ সেই অর্থে নেই।’
জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় অনেক সময় অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে খেলার সৌন্দর্য্য নষ্ট হয় এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়। এ নিয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা এবার আগেভাগেই কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে বসেছি যেন এই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।’
বাফুফে ও অ্যাথলেটিক্স দুই ফেডারেশন যৌথভাবে জাতীয় স্টেডিয়াম ব্যবহার করবে, এই নিদের্শনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। বারো মাসের মধ্যে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন সর্বসাকুল্যে এক মাস ব্যবহার করে। এরপরও বাফুফের নানা নির্দেশনা-অনুরোধ থাকে। বাফুফের নির্দেশনার জন্য থ্রো ইভেন্টগুলো জাতীয় স্টেডিয়ামের পরিবর্তে আর্মি স্টেডিয়ামে করছে ফেডারেশন।
অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন নিজেদের অধিকার আদায় না করে উল্টো নমনীয়। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ডিসকাস থ্রো, শটপুটে মাঠে মাটি হাল্কা নড়চড় হয়। সেটা আমরা ঠিক করে দিতে চাইলেও বাফুফে সামনে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য আমাদের অনুরোধ করেছে মাঠে আয়োজন না করার। তাদের সম্মানার্থে আমরা এবার আর্মি স্টেডিয়ামে করছি।’
সামার জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ৪০টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি ইভেন্টে প্রথম-তৃতীয় স্থান অর্জনকারীর জন্য আর্থিক পুরস্কার রয়েছে। রেকর্ডধারীরা পাবেন ২০ হাজার টাকা। আমেরিকা প্রবাসী সাবেক দ্রুততম মানব শাহ জালাল মবিন নারী ও পুরুষ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে প্রথম তিন জনের জন্য মোট ৮০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।
ফেডারেশনের নতুন কমিটি জাতীয় প্রতিযোগিতার পর সামার আয়োজন করছে। এই দু’টি আয়োজনে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়। কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় ফেডারেশনের ফান্ড থেকেই ব্যয় হচ্ছে, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের অনুদান ও আমাদের ফান্ড থেকে আপাতত খেলা চালিয়ে নিচ্ছি। সামনে আমরা স্পন্সর নিয়েই করব’- বলেন সাধারণ সম্পাদক।
মাদার অফ অল ডিসিপ্লিন হিসেবে খ্যাত অ্যাথলেটিক্স। সেই অ্যাথলেটিক্স এখন বাংলাদেশে অনেকটাই নিভৃতে। ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত অ্যাথলেট, সংগঠকদের আগামীকাল একটি বিশেষ সম্মাননা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্স নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, ‘আগামীকাল সামার অ্যাথলেটিক্স উদ্বোধনের পর আমরা প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ৪৬জন অ্যাথলেটিক্স ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করব। এতে তারা যেমন সম্মানিত হবেন তেমনি তরুণরাও অনুপ্রাণিত হবেন।’
ক্রীড়াঙ্গনে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। ফুটবল, ক্রিকেট,হকি অ্যাথলেটিক্স, সাতার,দাবা,কাবাডি নানা খেলার অনেক খেলোয়াড়, সংগঠকরা এই পুরস্কার পেয়েছেন। কোনো ফেডারেশন ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্তদের নিয়ে আলাদাভাবে এ রকম কোনো অনুষ্ঠান বা সম্মাননা সাম্প্রতিক সময়ে করতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০২:৩৮ ৪ বার পঠিত