শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫

নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ মন্তব্যের প্রতিবাদে ৩১ দেশের বিবৃতি

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ মন্তব্যের প্রতিবাদে ৩১ দেশের বিবৃতি
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫



নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ মন্তব্যের প্রতিবাদে ৩১ দেশের বিবৃতি

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের ৩১টি দেশ। দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতি নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ইসরাইলি নেতাদের ‘গ্রেটার ইসরাইল’ পরিকল্পনা এখন অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেট’। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই পরিকল্পনা নিয়ে আরও বিশদভাবে জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশন’-এ রয়েছেন তিনি।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম আই২৪-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু ‘গ্রেটার ইসরাইল’ নিয়ে আরও বলেন, এই পরিকল্পনায় বর্তমান ইসরাইল ভূখণ্ডের সঙ্গে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত এলাকাগুলোও একীভূত করা হবে এবং সম্ভবত বর্তমান জর্ডান ও মিশরের কিছু এলাকাও অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যের পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে আরব ও মুসলিম দেশগুলো। শনিবার (১৬ আগস্ট) বিশ্বের ৩১টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি যৌথ বিবৃতি দেন।

সৌদি প্রেস এজেন্সিতে প্রকাশিত বিবৃতিতে তারা বলেছেন, নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রীদের বক্তব্য ‘আন্তর্জাতিক আইনের একটি স্পষ্ট ও বিপজ্জনক লঙ্ঘন। এসব মন্তব্য আরবদের জাতীয় নিরাপত্তা, রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলো হলো সৌদি আরব, আলজেরিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, চাদ, কমোরোস, জিবুতি, মিশর, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মুরিতানিয়া, মরক্কো, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন।

এই দেশগুলোর পাশাপাশি আরব লীগের মহাসচিব, ওআইসি ও জিসিসির মহাসচিবরাও বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

সম্প্রতি নেতানিয়াহুর এই সাক্ষাৎকার নেন আই২৪-এর শ্যারন গাল যিনি অল্প সময়ের জন্য ইসরাইলি পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। সাক্ষাৎকারকালে নেতানিয়াহুকে তিনি ‘দ্য প্রমিজড ল্যান্ড’ মানচিত্র’ তথা গ্রেটার ইসরাইলের মানচিত্রের একটি তাবিজ উপহার দেন।

সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘গ্রেটার ইসরাইল’ ধারণার সঙ্গে তিনি কতটা সংযোগ অনুভব করেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক বেশি।’

গ্রেটার ইসরাইল বলতে ১৯৬৭ সালের জুনের ৬ দিনের যুদ্ধের পর ইসরাইল ও দেশটির সদ্য দখল করা এলাকা- পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির অগ্রদূত জে’ইভ জাবোতিনস্কিসহ শুরুর দিকের নেতৃস্থানীয় জায়নবাদীদের অনেকেই বর্তমান ইসরাইল, গাজা, পশ্চিম তীর ও বর্তমান জর্ডানকে বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করতেন।

সাক্ষাতকারে উপস্থাপক শ্যারন গাল নেতানিয়াহু আরও প্রশ্ন করেন, তিনি ইহুদি জনগণের পক্ষ থেকে কোনো মিশনে আছেন বলে মনে করেন কি না?

জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এক মিশনে রয়েছেন—বহু প্রজন্ম ধরে ইহুদিরা এখানে আসার স্বপ্ন দেখেছে এবং আমাদের পরেও অনেক প্রজন্ম আসবে একই স্বপ্ন নিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং, আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে ঐতিহাসিকভাবে এবং আধ্যাত্মিকভাবে আমার মধ্যে কোনো মিশন বা চেতনা কাজ করে কিনা, তার উত্তর হলো হ্যাঁ।‘

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৪:৩৬   ২ বার পঠিত