রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে প্রতিনিধি দল

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে প্রতিনিধি দল
রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫



বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে প্রতিনিধি দল

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে আলোচনার তৃতীয় দফা বৈঠকে অংশ নিতে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (২৮ জুলাই) দেশ ত্যাগ করবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে থাকছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কর্মকর্তা।

রোববার (২৭ জুলাই) এক ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের পণ্যের শুল্ক হ্রাস নিয়ে এ আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটনে ২৯ ও ৩০ জুলাই ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর) দপ্তরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভব হলে ৩১ জুলাই আরেকটি বৈঠক হতে পারে।

শুল্ক আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর আমরা কয়েক দফা কাজ করেছি। ওয়াশিংটনে দুই দফা সরাসরি বৈঠক হয়েছে, অনলাইনে সভা হয়েছে, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকও করেছি। সব পক্ষের মতামত নিয়ে ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানানো হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা আশাবাদী যে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক কমবে এবং ভারতের কিংবা ভিয়েতনামের তুলনায় তুলনামূলকভাবে আমরা সুবিধা পাব।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার ওই দেশ থেকে গম, তুলা ও বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার দিকেও নজর দিচ্ছে। সরকার এরইমধ্যে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজের অর্ডার দিয়েছে। এর আগেও ১৪টি অর্ডার ছিল। এবার রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বিবেচনায় রেখে অর্ডার বাড়ানো হয়েছে।

এসব সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক প্রভাব আছে কি না—জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, বোয়িং একটি বেসরকারি কোম্পানি। ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে অর্ডার দিয়েছে, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টি। কোম্পানি যাদের আগে অর্ডার দেওয়া হয়েছে, তাদের আগে সরবরাহ করবে। আমাদের কিছু উড়োজাহাজ অতিদ্রুত দরকার। আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে কিছু বোয়িং হাতে আসবে বলে আশা করি।

খাদ্য আমদানির বিষয়েও সচিব বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে দেশে বছরে প্রায় ৯ মিলিয়ন টন গম আমদানি হয়। আগে এতটা নির্ভরতা ছিল না। কিন্তু রেড সি সংকটের কারণে সরবরাহ চেইনে পরিবর্তন এসেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ওপর নির্ভরতা বাড়ছে।

তিনি আরও জানান, গম ও তুলা ছাড়াও সয়াবিন তেল আমদানির বিষয়েও বেসরকারি খাত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমরা যদি আরেকটি দেশ থেকে সুবিধাজনকভাবে পণ্য আমদানি করি, তাতে চীন বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে টানাপোড়েন হওয়ার কথা নয়। ব্যবসায়িক বাস্তবতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে চীন সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে রয়েছে। ফলে কিছু উৎপাদন অন্য দেশে স্থানান্তরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর কিছু অংশ আমরা বাংলাদেশে আনতে পারি।

মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিয়োগ ইস্যুও আলোচনায় এসেছে, তবে সেটা মুখ্য নয়। দেশটি এখন ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে রয়েছে, সেটি কমানোর লক্ষ্যেই তারা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নীতিতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানির কারণে দেশের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রয়োজন ও লাভ বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩২:০৭   ৭ বার পঠিত