প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ইতালিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ছয়টি দেশের সাথে সমঝোতা স্মারক সইসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি সমঝোতা স্মারকে সই করেন। অবৈধ অভিবাসন বন্ধে এবং বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতালির সঙ্গে প্রথমবারের মত মাইগ্রেশন অ্যান্ড মবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করলো বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে ড. আসিফ নজরুল বলেন, বৈধ পথে মাইগ্রেশন বৃদ্ধি করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। যারা ইতালি গমনেচ্ছু তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান সেটাই লক্ষ্য আমাদের।
তিনি বলেন, ‘ইতালি সিজনাল ও নন সিজনাল দুই ভাবে লোক নেবে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আমরা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করব। তারা বছরে একবার করে মিটিং করবে। আমাদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আছে, সেখানে আমাদের কর্মীরা যাতে ইতালির ভাষা শিখতে পারে, আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি।’
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অ্যাম্বাসির ফাইলগুলো যেন দ্রুত কার্যকর হয়। এছাড়া ইতালিতে যারা বাংলাদেশি ছাত্র আছে, তাদের ভিসা প্রক্রিয়া যেন সহজ হয়। অভিবাসনের দিক দিয়ে আমাদেরকে যেন ইতালির সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় সেই বিষয়টিও আলোকপাত করা হয়েছে।
‘ইতালিতে কি পরিমাণ লোক পাঠাবে, কোন কোন সেক্টরে যাবে’- এক সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নজরুল বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে এত ডিটেইলস থাকেনা। বর্তমানে আমাদের যে কোটা আছে, সেটা বাড়ানো হবে। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতালি চিন্তাভাবনা করবে। আমরা আশা করছি, অবৈধ পথে যাওয়া অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে।’
এসময় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা সবসময় শ্রমিকদের বৈধপথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করি। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন থেকে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও জোরদার হবে।
ড. আসিফ নজরুল এছাড়াও সম্প্রতি সৌদি সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাসকারী নারী কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি সংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নেওয়ার বিষয়েও সৌদি সরকারের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
তিনি জানান, জর্ডানে পুরুষ কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও জর্ডান সরকারের সাথে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জর্ডানে কর্মরত যে সকল নারী কর্মী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মস্থল পরিবর্তনসহ নানা কারণে অবৈধ হয়েছেন তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বৈধ হতে পারবেন। এর ফলে তারা জরিমানা ছাড়াই বৈধতা পাবেন। অন্যথায় তাদের বড় অঙ্কের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূইয়া ইতালিতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানে এই সমঝোতা স্মারককে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০৪:১৮ ৪ বার পঠিত